১৯৬৮সাল । শহীদ হন পাঞ্জাব রেজিমেন্টের জওয়ান হরভজন সিং। তারপর কেটে গিয়েছে ৪৮ বছর। কিন্তু তিনিআজও আছেন। আছেন মানুষের বিশ্বাসে। মৃত্যুর পরেও কর্তব্য পালনে কোন খেদ পড়েনি তাঁর । এমনটাই বিশ্বাস ভারত-চীন সীমান্তে কর্তব্যরত ভারতীয় সেন-জওয়ানদের । সেই বিশ্বাস থেকেই এখনও উপযুক্ত পারিশ্রমিক ও সেনাদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাও পান হরভজন সিংয়ের পরিবার ।
বাবা হরভজন সিং। জন্ম ১৯৪১-এ ।১৯৬৬ সালে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন । ১৯৬৮-তে তুষারধসে প্রাণ হারান হরভজন সিং । দীর্ঘ সার্চ অপারেশনের পরেও তাঁর দেহের সন্ধান মেলেনি । কথিত আছে, এক সহকর্মীরস্বপ্নে তাঁর দেহের ঠিকানা দেয় হরভজন। সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয় তাঁর দেহ , সম্পন্ন হয় তাঁর শেষকৃত্যও ।
এরপরেই ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে নাথুলায় বাবা হরভজন সিংয়ের স্মৃতিতে মন্দির নির্মাণ করা হয়। এই মন্দিরে তাঁর একটি ঘর আছে, যেখানে রাখা থাকে হরভজন সিংয়েরপোশাক ও জুতো নিয়ম করে পরিষ্কার করা হয় সেই পোশাক ও জুতো । নাথুলা সংলগ্ন অঞ্চলে কর্মরত সৈন্যরা বলেন‚ বাবা হরভজনকে এখনও দেখা যায় |
তিনি নাকি ঘোড়ায় চেপে টহল দেন এখানে ওখানে | জ্যোৎস্নাভেজা রাতে প্রায়ই নাকি দেখা যায় এক ঘোরসওয়ারির ছায়ামূর্তি টহল দিচ্ছে | শুধু ভারতীয় সেনারা নন | সীমানার ওপারে চিনা সৈনিকরাও নাকি দেখেছে এই দৃশ্য | ভারতীয় সৈন্যদের নাকি মাঝে মাঝেই স্বপ্নে পরামর্শ দেন বাবা হরভজনের আত্মা | সাবধান করেন‚ কোন পথে হামলা চালাতে পারে চিনের সৈন্যরা |
মৃত্যুর পরে সাম্মানিকভাবে ‘কর্নেল‘ পদে উত্তরণ হয় হরভজনের | সম্প্রতি ‘অবসর‘ নিয়েছেন তিনি | তার আগে অবধি প্রতি বছর ‘বার্ষিক ছুটি‘পেতেন তিনি | মালপত্র ভর্তি ট্রাঙ্ক দুজন সিপাইয়ের সঙ্গে যেত কাপুরথালায় | আবার ফিরে আসত এক মাস পরে | ‘ ছুটি‘ কাটিয়ে | তাঁর অস্তিত্ব সজীব চিনের কাছেও | প্রতি মাসে একবার নাথুলায় ফ্ল্যাগ মিটিং হয় দু দেশের | তখন একটি চেয়ার রাখা হয় হরভজন সিং-এর নামে|